Thursday, December 19, 2024

বড়নগরের চারবাংলা মন্দিরঃ মুর্শিদাবাদের বারাণসী

দেবাশিস পালঃ বহরমপুরঃ  রানী ভবানী রাজসাহী জেলার অন্তর্গত ছাতিম গ্ৰামের আত্মারাম চৌধুরীর কন্যা ছিলেন।অষ্টাদশ- উনবিংশ শতাব্দীর রাজসাহী জমিদারীর রাজধানী, ও এই বন্দরনগরীতে ইউরোপীয় গণের গতায়তের প্রধান স্থান ছিল বড়নগর।৩২ বছর বয়সের বৈধব্য দশাপ্রাপ্ত ও হিন্দু ধর্মানুসারে ব্রহ্মচর্যাশ্রমে ব্রতী এই নারী আজ ও প্রাতঃস্মরণীয় তাঁর কার্যপ্রণালীর জন্য। প্রজা কর থেকে আয় দেড় কোটি টাকার মধ্যে, সত্তরলক্ষ টাকা সরকারকে কর দেওয়ার পর বাকি টাকা ব্যয়িত হতো এইসব মন্দির ও প্রজা কল্যাণমূলক কাজে ।।

এরপর একমাত্র কন্যা তারা র বিবাহ হয় রাজশাহী র খাজুরগ্ৰামনিবাসী রঘুনাথ লাহিড়ী সঙ্গে, তিনি ও পরলোকগমন করলে,রানী ভবানী রাজযোগী রামকৃষ্ণ কে দত্তক নেন,তিনি কীরিটেশ্বরী মন্দির সংলগ্ন স্থানে শবদেহের ওপর তন্ত্রসাধনে ব্রতী ছিলেন।।

এই পর ই মাতা কন্যায় বড়নগর সংলগ্ন স্থানে , চার বাংলা,জোড় বাংলা,রাজ- রাজেশ্বরী, ভবানীশ্বর মন্দির (বাণব্যাহৃতিরাগেন্দুসমিতে শকবৎসরে- অর্থাৎ ১৬৭৫ শকাব্দ),করুনাময়ী,জয়দুর্গা, মদনগোপাল ও মহালক্ষ্মী(দারুব্রহ্ম)ও হয়গ্ৰীব মূর্তি(এটি চুরি গেছে) ,অষ্টভুজ গনেশমূর্তি(হলহলি-কলকলি), দয়াময়ী কালীমূর্তি, ইত্যাদি মন্দিরাবলী ও মূর্তি তথায় অবস্থিত।।

এছাড়াও, চারবাংলার উত্তরে রাজা বিশ্বনাথের অসম্পূর্ণ হপ্তপরগনার কাছারিঘর ও জঙ্গলাকীর্ণ ভাবে তৎসংলগ্নস্থানে দৃশ্যমান।। বেশীরভাগ মন্দিরাবলীই টেরাকোটার অতিসূক্ষ্ম মৃত্তিকাখোদিত শিল্পকলার উৎকৃষ্ট নিদর্শন।।

ভাগীরথী তীরস্থ এই তৎসংলগ্নস্থানে প্রতি দু-এক-পদ এগোতেই এই সমস্ত মন্দিরাবলী অবস্থিত থাকায়, বটবৃক্ষের শান্ত তরুচ্ছায়াঘন নিবিড় তপোবনতুল্য স্থান গুলিকে, নিখিলনাথ রায় তার”মুর্শিদাবাদ কাহিনী”(১৮৯৭খ্রিঃ)গ্ৰন্থের “বড়নগর” প্রবন্ধে এই স্থানকে”মুর্শিদাবাদের বারাণসী”অভিধায় আখ্যায়িত করেছেন।

 

Hot Topics

Related Articles