পরিচিত চাষাবাদের বাইরে বিকল্প চাষের দিকেও ঝুঁকছেন কৃষকরা। ঠিক যেমন দিশা দেখাচ্ছে ‘ড্রাগন ফ্রুট। ‘ প্রচুর খাদ্যগুনে ভরপুর ‘ড্রাগন ফ্রুট’ চাষ করে লাভের মুখ দেখেছেন অনেকেই। বৈজ্ঞানিক নাম Hylocereus undatus। অরিজিন মেক্সিকোতে হলেও ড্রাগন ফ্রুট জনপ্রিয় থাইল্যান্ডে। সেখানে সমুদ্র ঘেঁষা পাটায়াতে এই ফলের চাষ বেশি হয় বলে ড্রাগন ফ্রুটের আর এক নাম ‘পাটায়া ফ্রুট’। আর এই ফল এখন আপন করে নিয়েছে বাঙালিও। চাহিদা বেড়েছে, অন্যান্য ফলের তুলনায় দামও বেশী। আর লক্ষ্মীলাভে ড্রাগন ফল যেন নয়া দিশা দেখিয়েছে মুর্শিদাবাদের নবগ্রামের মৃণাল কান্তি সরকারের কাছে। নবগ্রামের মাটিতেই ব্যাপক হারে চাষ হচ্ছে ‘ড্রাগন ফ্রুট’। নবগ্রাম থানার অন্তর্গত কড়জোড়া গ্রামের বাসিন্দা মৃণাল কান্তি সরকার প্রায় চার বছর ধরে এই ফল চাষ করছেন। ড্রাগন ফল চাষ সম্বন্ধে জানার পরেই আগ্রহ বাড়ে তাঁর, উত্তরবঙ্গ থেকে ফলের চারা এনেছিলেন। প্রথমে ১০ কাঠা জমিতে ১৬০ টি গাছ লাগান, ‘ক্যাকটাস জাতীয় এই গাছ মাঠে কংক্রিটের পিলার করে তাতে জড়িয়ে দিতে হয়৷ বর্তমানে দেড় বিঘা জমিতে শয়ে শয়ে ড্রাগন ফলের গাছ সামলাচ্ছেন তিনি। পরীক্ষামূলক চাষ দিয়ে শুরু তারপর আর পেছনে তাকান নি মৃণাল কান্তি । সামান্য পরিশ্রমে মিলেছে সাফল্য। হচ্ছে ব্যাপক হারে ফলনও। অর্থলাভ হওয়ায় বইছে খুশির হাওয়া।
মূলত থাইল্যান্ডের ফল ‘ড্রাগন ফ্রুট’। মধ্য আমেরিকার মাটিতেই বেশি জন্মায় এই ফল। থাইল্যান্ডের বাণিজ্যিক আয়ের অধিকাংশই নির্ভর করে এই ফলের উপর৷ খেতে যথেষ্টই সুস্বাদু৷ ভিটামিন সি ও নানা উপকারি উপাদান থাকায় এই ফলের স্বাস্থ্যগুণও যথেষ্ট। চিকিৎসকদের মতে, ক্যানসারও প্রতিরোধ করতে পারে ড্রাগন ফ্রুট৷ বাজারে এই ফলের চাহিদাও এখন বেড়েছে। পুষ্টিতে ভরপুর ড্রাগন, দুরারোগ্য ব্যাধি সারাতে পারে ড্রাগন। ফাইবারে সমৃদ্ধ, ইমিউন সিস্টেমকেও শক্তিশালী করে, রক্তে বাড়িয়ে তোলে আয়রনের মাত্রা। কম খরচে অতিরিক্ত লাভের জন্য ড্রাগন ফ্রুটের কোনও বিকল্প নেই৷ তবে ভারতবর্ষে এই ফলের চাষ বিশেষ হয় না। মূলত বাইরে থেকেই আমদানি করা হয়৷ ফলে অনেক সময়ই জোগান দেওয়া সম্ভব হয় না৷ যদিও এখন বিদেশি এই ফল চাষে পা বাড়াচ্ছেন জেলার বহু আগ্রহী। ড্রাগন ফল চাষে চাষিদের উৎসাহ যোগাচ্ছে কৃষি দপ্তরও।