Thursday, December 19, 2024

কদমার কাহিনি , কীভাবে তৈরি হয় কদমা ?

পূর্ববঙ্গের অনেক অঞ্চলে এই মিষ্টি কে ‘তিলুয়া’ বলা হয় | আর আমাদের পশ্চিমবঙ্গে এই মিষ্টির নাম “কদমা” |  কদমা একটি শুকনো মিষ্টি | এটি দেখতে অনেকটা কদমফুল আকারের এবং ভিতরটা ফাঁপা।  উপর ও নিচ খানিক কমলালেবুর মতো চাপা। বহরমপুরের কাছে মনীন্দ্রনগর লাগোয়া এলাকায় বেশ কিছু বাড়িতে এখনও রয়েছে কদমার কারখানা।

কদমা  প্রধানত ধবধবে সাদা রঙের তৈরি করা হয়। প্রয়োজন ভেদে এর আকারও বিভিন্ন। একদম ছোট ১ সেমি ব্যাসের থেকে শুরু করে ১০-১৫সেমি পর্যন্ত বানানো হয়।আবার এই কালীপুজোর সময় বিভিন্ন রঙের ও বিভিন্ন আকৃতির কদমা পাওয়া যায় | কদমা বিক্রেতা অমিত মন্ডল জানাচ্ছেন এই সময় এই  বিভিন্ন রঙের, বিভিন্ন আকৃতির কদমার ব্যাপক চাহিদা |

কিন্তু এই কদমা তৈরী হয় কীভাবে? মূলত চিনি দিয়ে তৈরি হয়।  প্রথমে জলে চিনি দিয়ে ফোটাতে হবে। এরপর ঠাণ্ডা করে চিনি জমাট বাঁধলে ছড়ানো পাত্রে অল্আপ আইসিং সুগার ছিটিয়ে সিরা  ঢেলে অল্প গরম থাকা অবস্থায় রোল করে খুঁটিতে ঝুলিয়ে টানতে হবে। এরপর আবার ভাঁজ করে পুনরায় টানতে হবে।এভাবে অনেকবার টানার পর লাল চিনির সিরা সাদা হয় |  এভাবে অনেকবার টানার পর ভেতরটা ফাঁপানো হয়ে যায় তখন চপিংবোর্ডে আইসিং সুগার ছিটিয়ে রোল করে কদমা বানানোর ছাঁচ বা মেকারে চাপ দিয়ে কেটে কদমার আকারে কেটে নিতে হয়। এরপর বাতাসে রেখে শুকিয়ে নিতে হয় |

সাধারণত পৌষ সংক্রান্তিতে কদমা বেশি খাওয়া হয়। কালী পূজা, মেলা, রথ প্রভৃতিতে কদমা আবিচ্ছেদ্য অনুষঙ্গ। কালী ঠাকুরের হাতে কদমা দেওয়ার অতি পুরনো একটি রীতি। ঠাকুরের হাতে বিশালাকার কদমা দেওয়ার প্রতিযোগীয়তাও হয়। লক্ষ্মীপুজতেও এর ব্যবহার আছে।বিশেষত কালী পুজোয় এই কদমার চাহিদা বাড়ে |

সাজানো রয়েছে কদমা

বহরমপুরের মনীন্দ্রনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায় এই কদমা তৈরির কারখানা | কদমা বানানোর কারিগর কালাচাঁদ শীল জানাচ্ছেন প্রত্যেকদিন ১০ থেকে ১৫  কেজি চিনি গলিয়ে কদমা তৈরী হয় |এর সাথে দুঃখ ও শঙ্কার সুরে বলেন, “পরিস্থিতি এমন দিনকে দিন কারিগর কমে যাচ্ছে | কতদিন এই শিল্প কে ধরে রাখতে পারবো জানিনা |”

Hot Topics

Related Articles